ছাত্র-জনতার বিপ্লবকে ব্যর্থ করতে ভারত থেকে প্রচারণা চালানো হচ্ছে

ছবি সংগৃহীত

 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ছাত্র-জনতার বিপ্লবকে ব্যর্থ করতে বিদেশ থেকে, বিশেষ করে ভারত থেকে এমন কিছু প্রচারণা চালানো হচ্ছে, যেটার উদ্দেশ্য বাংলাদেশের বিপ্লবকে নস্যাৎ করা। তারা কতগুলো রাজনৈতিক ইস্যুকে… করা হচ্ছে, যেটা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। প্রথম দিকে তারা প্রচারণা চালিয়েছে যে, এখানে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন করা হচ্ছে, যার এক-দুই শতাংশও সঠিক নয়।

আজ গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

 

মির্জা ফখরুল বলেন, যেসব ঘটনা ঘটেছে, সেগুলো সংখ্যালঘু হিসেবে নয়, সেটি রাজনৈতিকভাবে ঘটেছে। এখন আবার দখলদারিত্বে ঘটনা নিয়ে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। সেখানে ১/১১ সরকারের সময়ের মতো বিএনপিকে লক্ষ্য করে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। আমি মনে করি, এটা অত্যন্ত অন্যায় হচ্ছে। কারণ গত ১৫ বছর ধরে বিএনপি এই দেশে গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করার জন্য সবচেয়ে বেশি ত্যাগ স্বীকার করেছে। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলায় সাজা খেটেছেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বিদেশে নির্বাসিত রয়েছেন। আমাদের শীর্ষ নেতাদের একজনও বাকি নেই যারা ৫-১০ জেলে যাননি। নেতাদের নামে ১০০ থেকে ৩০০ পর্যন্ত মামলা রয়েছে। সাজা হয়েছে প্রায় আড়াই হাজার নেতাকর্মীর। গুম হয়েছে ৭-৮শ’ নেতাকর্মী। খুন হয়েছে আড়াই হাজারের বেশি, গ্রেপ্তারও হয়েছে।

গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বিএনপির অবদানকে খাটো করার একটা পরিকল্পিত প্রচারণা চালানো হচ্ছে বলেও দাবি করেন মির্জা ফখরুল।

 

বিএনপিকে নিয়ে জামায়াতে ইসলামীর আমিরের বক্তব্যের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা একটা চক্রান্ত। আমরা তো ১/১১ এর কথা ভুলে যাইনি। ১/১১’তে যেটা হয়েছিল, বিরাজনীতিকরণের চেষ্টা। যাদের জনমর্থন নেই, জনগণ মনে করে না যে, এরা সরকার চালাতে পারবে না, আমি কোনো দলের নাম বলছি না। আমাদের সংগ্রাম তো হচ্ছে গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য, সেই জন্য তো আমরা নির্বাচনের কথা বলব। এটা আমাদের অধিকার। নির্বাচনের জন্য তো এতদিন ধরে সংগ্রাম করেছি। আমরা আশা করব, জনগণের মধ্যে যেন বিভাজন সৃষ্টি না হয়, এমন যেন বক্তব্য না দেন।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে এসেছে, সেই সরকারকে যৌক্তিক সময় অবশ্যই দিতে হবে। তার জন্য সকল প্রকার সহযোগিতা করে চলছি, সেই সহযোগিতা করব।

 

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ভুলে যাইনি ১/১১’এর সময় কারা বিরাজনীতিকরণের চেষ্টা করেছিল। সেই সময় আমাদের দল বিএনপিকে পুরোপুরি বাতিল নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হয়েছিল। এটা তো আমরা ভুলতে পারি না। গণতন্ত্র, রাজনীতি ও দেশের উন্নয়নের জন্য এটা তো বলতেই হবে। আবার যদি ওই চেহারাগুলো সামনে দেখি, তখন তো জনগণের মধ্যে সন্দেহের উদ্বেগ আসে। সেই জন্য আমরা বলেছি, যারা বিগত সময়ে আওয়ামী লীগের দোসর হিসেবে কাজ করেছে, আমরা সেই চেহারাগুলো দেখতে চাই না।

 

মানুষ দেশে একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনা চায় উল্লেখ করে সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, গণতন্ত্র ও নির্বাচন চায়। নির্বাচন এলে মানুষ খুশি হয়, অবাধ, সুষ্ঠু হলে মানুষ খুশি হয়। জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে দেশ কীভাবে চলবে। আমরা সংস্কার চাই, অবশ্যই সেই সংস্কার হতে হবে জনগণের সরকার দিয়ে।

 

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বিএনপি যে যৌক্তিক সময় দিতে চায়, সেই যৌক্তিক সময় কতদিন? এ প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, এই জন্য তো আমরা আলোচনার কথা বলছি। যৌক্তিক সময়ের ধারণা নির্ভর করবে পারস্পরিক আলোচনার মধ্যে দিয়ে। আমরা কী চাই, অন্তবর্তীকালীন সরকার কী চায়, জনগণ কী চায়, তা নিয়ে তো আলোচনা হতে হবে।

 

 

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» চশমার যত্ন

» বর্তমানে ছাত্রদের নেতৃত্ব দেওয়ার কেউ নেই

» প্যানক্রিয়াটিক ডায়াবেটিস

» দেশের চার সমুদ্র বন্দরে সতর্ক সংকেত

» পরীক্ষামূলকভাবে বঙ্গবন্ধু রেলসেতুতে চলল ট্রেন

» কী কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন আমির!

» ব্যাটিং বিপর্যয়ে বড় হারের মুখে বাংলাদেশ

» গাজায় ইসরায়েলি হামলা চলছেই, বাড়ছে নিহতের সংখ্যা

» গুম-ক্রসফায়ারের হোতা জিয়াউল

» আজ মঙ্গলবার রাজধানীর যেসব এলাকা-মার্কেট বন্ধ

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

ছাত্র-জনতার বিপ্লবকে ব্যর্থ করতে ভারত থেকে প্রচারণা চালানো হচ্ছে

ছবি সংগৃহীত

 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ছাত্র-জনতার বিপ্লবকে ব্যর্থ করতে বিদেশ থেকে, বিশেষ করে ভারত থেকে এমন কিছু প্রচারণা চালানো হচ্ছে, যেটার উদ্দেশ্য বাংলাদেশের বিপ্লবকে নস্যাৎ করা। তারা কতগুলো রাজনৈতিক ইস্যুকে… করা হচ্ছে, যেটা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। প্রথম দিকে তারা প্রচারণা চালিয়েছে যে, এখানে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন করা হচ্ছে, যার এক-দুই শতাংশও সঠিক নয়।

আজ গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

 

মির্জা ফখরুল বলেন, যেসব ঘটনা ঘটেছে, সেগুলো সংখ্যালঘু হিসেবে নয়, সেটি রাজনৈতিকভাবে ঘটেছে। এখন আবার দখলদারিত্বে ঘটনা নিয়ে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। সেখানে ১/১১ সরকারের সময়ের মতো বিএনপিকে লক্ষ্য করে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। আমি মনে করি, এটা অত্যন্ত অন্যায় হচ্ছে। কারণ গত ১৫ বছর ধরে বিএনপি এই দেশে গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করার জন্য সবচেয়ে বেশি ত্যাগ স্বীকার করেছে। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলায় সাজা খেটেছেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বিদেশে নির্বাসিত রয়েছেন। আমাদের শীর্ষ নেতাদের একজনও বাকি নেই যারা ৫-১০ জেলে যাননি। নেতাদের নামে ১০০ থেকে ৩০০ পর্যন্ত মামলা রয়েছে। সাজা হয়েছে প্রায় আড়াই হাজার নেতাকর্মীর। গুম হয়েছে ৭-৮শ’ নেতাকর্মী। খুন হয়েছে আড়াই হাজারের বেশি, গ্রেপ্তারও হয়েছে।

গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বিএনপির অবদানকে খাটো করার একটা পরিকল্পিত প্রচারণা চালানো হচ্ছে বলেও দাবি করেন মির্জা ফখরুল।

 

বিএনপিকে নিয়ে জামায়াতে ইসলামীর আমিরের বক্তব্যের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা একটা চক্রান্ত। আমরা তো ১/১১ এর কথা ভুলে যাইনি। ১/১১’তে যেটা হয়েছিল, বিরাজনীতিকরণের চেষ্টা। যাদের জনমর্থন নেই, জনগণ মনে করে না যে, এরা সরকার চালাতে পারবে না, আমি কোনো দলের নাম বলছি না। আমাদের সংগ্রাম তো হচ্ছে গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য, সেই জন্য তো আমরা নির্বাচনের কথা বলব। এটা আমাদের অধিকার। নির্বাচনের জন্য তো এতদিন ধরে সংগ্রাম করেছি। আমরা আশা করব, জনগণের মধ্যে যেন বিভাজন সৃষ্টি না হয়, এমন যেন বক্তব্য না দেন।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে এসেছে, সেই সরকারকে যৌক্তিক সময় অবশ্যই দিতে হবে। তার জন্য সকল প্রকার সহযোগিতা করে চলছি, সেই সহযোগিতা করব।

 

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ভুলে যাইনি ১/১১’এর সময় কারা বিরাজনীতিকরণের চেষ্টা করেছিল। সেই সময় আমাদের দল বিএনপিকে পুরোপুরি বাতিল নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হয়েছিল। এটা তো আমরা ভুলতে পারি না। গণতন্ত্র, রাজনীতি ও দেশের উন্নয়নের জন্য এটা তো বলতেই হবে। আবার যদি ওই চেহারাগুলো সামনে দেখি, তখন তো জনগণের মধ্যে সন্দেহের উদ্বেগ আসে। সেই জন্য আমরা বলেছি, যারা বিগত সময়ে আওয়ামী লীগের দোসর হিসেবে কাজ করেছে, আমরা সেই চেহারাগুলো দেখতে চাই না।

 

মানুষ দেশে একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনা চায় উল্লেখ করে সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, গণতন্ত্র ও নির্বাচন চায়। নির্বাচন এলে মানুষ খুশি হয়, অবাধ, সুষ্ঠু হলে মানুষ খুশি হয়। জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে দেশ কীভাবে চলবে। আমরা সংস্কার চাই, অবশ্যই সেই সংস্কার হতে হবে জনগণের সরকার দিয়ে।

 

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বিএনপি যে যৌক্তিক সময় দিতে চায়, সেই যৌক্তিক সময় কতদিন? এ প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, এই জন্য তো আমরা আলোচনার কথা বলছি। যৌক্তিক সময়ের ধারণা নির্ভর করবে পারস্পরিক আলোচনার মধ্যে দিয়ে। আমরা কী চাই, অন্তবর্তীকালীন সরকার কী চায়, জনগণ কী চায়, তা নিয়ে তো আলোচনা হতে হবে।

 

 

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com